অধিকাংশ অফিসেই নির্দিষ্ট ঘন্টার চেয়ে বেশি সময় অবস্থান করেন কর্মীরা। প্রশ্ন হলো, অফিসে বেশিক্ষণ অবস্থান করলেই কি কাজ ভালো হয়? উল্টো ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করে চাপ ও ক্লান্ত অনুভব করেন। ফলে কর্মদক্ষতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে কর্মীদের। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে এমন তথ্য।
কর্মক্ষেত্র সংক্রান্ত মার্কিন মেসেজিং অ্যাপ স্ল্যাকের ওয়ার্কফোর্স ল্যাব সম্প্রতি কর্মঘণ্টা ও কর্মক্ষমতা বিষয়ক একটি নিরীক্ষা চালিয়েছে। ওই রিপোর্ট-এর ফলাফলের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশতি হয়েছে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে অনেক কর্মচারীকে অতিরিক্ত ঘণ্টা কাজ করতে হয়। যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য হন তাদের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে।
প্রায় ১০ হাজার ডেস্ক-ভিত্তিক কর্মীদের ওপর নিরীক্ষা চালায় স্ল্যাক। এতে দেখা গেছে, যারা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করে তারা অতিরিক্তি ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকা কর্মীদের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি কর্মক্ষম। যারা নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার পরে কাজ করেন তারা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ কাজের চাপ এবং ক্লান্তি অনুভব করে থাকেন।
জরিপের ফলাফলে আরও দেখা যায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা বৃহত্তর স্বার্থের নামে কম-বেশি চাপ দিয়ে থাকেন কর্মীদের। ফলে অনেকে মানসিক চাপ ও হতাশা বোধ করেন। কাজের দক্ষতা কমে যায়। ভালো ফল পাওয়া যায় না।
সাম্প্রতিক এই গবেষণা ও বিশ্লেষণের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং স্ল্যাকের ওয়ার্কফোর্স ল্যাবের প্রধান ক্রিস্টিনা জানজার বলেন, ‘বেশি কাজ করলে ভালো ফল মিলবে আমাদের সমাজে এমনটা প্রচলিত ধারণা
আছে। তবে গবেষণা বলছে বেশি কর্মঘণ্টা মানেই ভালো ফলাফল নয়।’
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, ডেস্ক কর্মীরা অফিসে কাজের জন্য একটি আদর্শ সময় হিসেবে দিনে চার ঘণ্টা আগ্রহ নিয়ে কাজ করেন। আর দুই ঘণ্টার বেশি সময় এবং মিটিংকে অতিরিক্ত বোঝা মনে করেন। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৫ শতাংশ বলেছেন বিকাল ৩ টা থেকে ৬ টার মধ্যে তাদের কাজের মান হ্রাস পায়। অধিকাংশ জানান, তারা টানা কাজ করেন। খুব কমই বিরতি নেন আবার কখনও নেনই না।
এর আগেও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা কর্মদক্ষতা কমিয়ে দেয়। যেমন ২০১৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টা কাজের পর কর্মীদের কর্মক্ষমতা তীব্রভাবে কমে যায়। আর ৫৫ ঘণ্টা পর দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করা ব্যক্তির স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ এবং হৃদরোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি ১৭ শতাংশ।
Comments