top of page

থিন এরারুট নয় দোকানে গিয়ে বলতাম ব্রিটানিয়া বিস্কুট দাও তো ! জনপ্রিয় ঐ বিস্কুটের বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন ছিল দাদু ও নাতি।

দাদু খায়..... নাতি খায়


মনে পড়ে শৈশবে দেখা এই বিজ্ঞাপনের কথা?

থিন এরারুট নয় দোকানে গিয়ে বলতাম ব্রিটানিয়া বিস্কুট দাও তো ! জনপ্রিয় ঐ বিস্কুটের বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন ছিল দাদু ও নাতি। তাঁরা হয়তো বেঁচে থাকবে, কিন্তু কলকাতার বুক থেকে হারিয়ে গেলো দেশের প্রথম আধুনিক বিস্কুট কারখানা।


শুরুটা 1892 সালে, কলকাতায় একদল ব্রিটিশ ব্যবসায়ী মাত্র 295 টাকা দিয়ে বিস্কুট তৈরি শুরু করেছিলেন । প্রথমদিকে মধ্য কলকাতার একটি ছোট বাড়িতে বিস্কুট তৈরি করা হত। সংস্থাটি পরে গুপ্ত ব্রাদার্স কিনে নেয় , যার প্রধান ছিলেন নলিন চন্দ্র গুপ্ত । তিনি ভিএস ব্রাদার্স নাম দিয়ে উদ্যোগটি শুরু করেছিলেন । 1910 সালে এদেশে প্রথম ঐ কোম্পানি মেশিন দিয়ে বিস্কুট তৈরি শুরু করে ।

1918 সালে, কলকাতায় বসবাসকারী একজন ইংরেজ ব্যবসায়ী সিএইচ হোমস এতে অংশীদার হিসেবে যোগ দেন। কোম্পানির নাম হয় ব্রিটানিয়া বিস্কুট কোম্পানি লিমিটেড। মুম্বই কারখানাটি 1924 সালে স্থাপিত হয়েছিল এবং লন্ডনের পিক ফ্রান্স নামে একটি বিস্কুট কোম্পানি বিবিসিও-তে নিয়ন্ত্রণকারী অংশ কিনে নেয়। এর পরেই ব্রিটানিয়া বিস্কুট জনপ্রিয় হতে শুরু করে।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় , ব্রিটানিয়া মিত্রশক্তির সৈন্যদের সরবরাহের জন্য সেই সময়ের সবচেয়ে বড় অর্ডার পেয়েছিল । সেই অর্ডার কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়কে 8 শতাংশ বাড়িয়ে 1.36 কোটিতে পৌঁছে দেয়।


1979 সালে কোম্পানির নাম ব্রিটানিয়া বিস্কুট কোম্পানি লিমিটেড থেকে ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড করা হয় । 1982 সালে , একটি আমেরিকান কোম্পানী, Nebisco Brands Inc. পিক ফ্রান্সিসের কাছ থেকে একটি অংশ কিনে নেয় এবং ব্রিটানিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার হয়ে ওঠে । আর 1983 সালে , কোম্পানির বিক্রয় 100 কোটি ছুঁয়ে ফেলে। 1989 সালে ব্রিটানিয়া তার হেড অফিস কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোরে সরিয়ে নেয়।


ব্রিটানিয়ার বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন মহম্মদ আলী জিন্নাহর নাতি নাসলি ওয়াদিয়া, বম্বে ডাইং এর মালিক এবং এমডি বরুণ বেরি। নাসলি ওয়াদিয়ার ছেলে নেস ওয়াদিয়া হলেন এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর। এছাড়া প্রাক্তন RBI গভর্নর উর্জিত প্যাটেল কোম্পানির একজন নন-এক্সিকিউটিভ স্বাধীন পরিচালক। কোম্পানির পরিচালনা নিয়ে ওয়াদিয়াদের সাথে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী বিস্কুট কিং রাজন পিল্লাইয়ের ভয়ঙ্কর বোর্ডরুম লড়াইয়ের সাক্ষী নব্বইয়ের দশক। রহস্যজনক ভাবে তিহার জেলে পিল্লাইয়ের মৃত্যু ইতি টানে সেই যুদ্ধের।‌🛑


উত্তর আমেরিকা , ইউরোপ , আফ্রিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় 60 টিরও বেশি দেশে রপ্তানি করা হয় ব্রিটানিয়ার পণ্য। ভারতে রয়েছে তাদের 50 লাখেরও বেশি খুচরা আউটলেট । সংগঠিত রুটির বাজারে ব্রিটানিয়া ব্রেড আজ সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড। সুতরাং চাহিদা নেই একথা তো বলা যাচ্ছে না। এতোদিন ব্রিটানিয়ার ভারতে ১৩টি কারখানা ছিলো । তাহলে অশুভ বলেই কি বন্ধ করে দেয়া হলো বছরে আড়াই হাজার টন বিস্কুট উৎপাদনকারী কলকাতার প্রথম কারাখানাটি....? কে দেবে জবাব!

Comments


bottom of page