হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট সংক্রান্ত মামলায় আদানি গোষ্ঠী স্বস্তি পেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এ বিষয়ে সেবির অভ্যন্তরীণ তদন্তেই আস্থা রেখেছে শীর্ষ আদালত। তারাই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে।
হিন্ডেনবার্গকাণ্ডে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেয়েছে গৌতম আদানির সংস্থা। শীর্ষ আদালত এ বিষয়ে শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির অভ্যন্তরীণ তদন্তের উপরই আস্থা রেখেছে। এই রায় শোনার পর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে মতামত জানিয়েছেন আদানি স্বয়ং। তিনটি শব্দে ব্যাখ্যা করেছেন, শীর্ষ আদালতের এই রায় আসলে কী বোঝাল।
আদানি লিখেছেন, ‘‘মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় এটাই বুঝিয়ে দিল যে, সত্যের জয় হবেই।’’ এর পর ওই বাক্যটির প্রচলিত হিন্দি ব্যাখ্যা দিয়ে আদানি লিখেছেন, ‘‘সত্যমেব জয়তে’’।
আদানি জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি খুশি। যাঁরা এই কঠিন সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। সেই সঙ্গে দেশের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির জন্য তাঁর সংস্থা আগামী দিনেও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে জানান আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার।
সেবির বিধি ভেঙে শেয়ারের দর বৃদ্ধি করার অভিযোগ উঠেছিল আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের গভীরে পৌঁছতে সেবিরই অভ্যন্তরীণ তদন্তে ভরসা রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বুধবার জানায়, কোনও অসমর্থিত রিপোর্ট (পড়ুন হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট)-এ ভরসা করে জাতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তে সন্দেহ করা যথাযথ নয়। ওই রিপোর্টকে বড়জোর এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হিসাবে দেখা যেতে পারে। প্রামাণ্য নথি হিসাবে নয়। এই মর্মে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে যে সিট গঠনের দাবি উঠেছিল, বুধবার তা-ও খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
গত জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সেবির বিধিকে ফাঁকি দিতে ভুঁইফোঁড় বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে নিজেদের সংস্থার শেয়ার কিনিয়েছে তারা। সেই রিপোর্টেরই ভিত্তিতে দু’টি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তার মধ্যে একটিতে সিট গঠনের আর্জি জানানো হয়। বুধবার সেই মামলারই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় সিট গঠন করা হবে না। এ ব্যাপারে সেবির তদন্তেই আস্থা রাখছে তারা। সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, ‘‘নিয়ন্ত্রক সংস্থার আওতায় যেখানে তদন্ত চলছে, সেখানে শীর্ষ আদালত দখলদারি করতে পারে না। সেবি যে ভাবে তদন্ত করছিল, সে ভাবেই এই সংক্রান্ত বাকি দু’টি মামলার তদন্তও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’