top of page

আপনার ইনকাম অনুযায়ী টাকা সঞ্চয় করার হিসাব দেখে নিন! ১০,০০০ টাকা ইনকামেও ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় সম্ভব।

নিজের ভবিষ্যতকে আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ করে রাখতে চান প্রতিটি মানুষ। তবে এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে অতিরিক্ত খরচের মাঝে নিজের উপার্জনের টাকা থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা অর্থ সঞ্চিত রাখা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত মানুষরা সংসার খরচ চালাতেই নাজেহাল হয়ে ওঠেন। তাই সঞ্চয় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে কারা করে উঠতে পারেন না। আসলে সঞ্চয় করার জন্য দরকার হয় সঠিক পরিকল্পনা। উপার্জনের পরিমাণ যাই হোক না কেন, জীবনধারণের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা বজায় রাখলে নিজের সমর্থ্য মতো ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা সম্ভব হয়। আজ এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদের এমনই একটি সঞ্চয়ের পরিকল্পনার কথা জানাবো।

আপনার আয় অনুযায়ী খরচের হিসাব

এখানে যে হিসাবটি দেওয়া হয়েছে তা মূলত তিনটি বেতন কাঠামোর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এই তিন বেতন কাঠামো হলো ৩০০০০, ৪০০০০ ও ৫০০০০ টাকা। দুই জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং দুই জন শিশুকে নিয়ে মোট চার জনের পরিবারের সম্ভাব্য খরচ এবং সঞ্চয় এর পরিমাণ ঠিক কেমন হতে পারে তা জেনে নিন। এক্ষেত্রে অবশ্যই জানিয়ে রাখি, আপনার বাড়ির অবস্থা অনুযায়ী আপনার খরচ নির্ভর করবে সেক্ষেত্রে আপনি নিম্নের দেওয়া খরচ গুলি অনুযায়ী আপনার একটি খরচের তালিকা নিজে থেকেই করে নিতে পারবেন।

বাড়ি ভাড়া

৫০০০০ টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ১০০০০ টাকা, ৪০ হাজার টাকা বেতনের জন্য ৭০০০ টাকা এবং ৩০ হাজার টাকা বেতনের জন্য ৫০০০ টাকা বরাদ্দ করা যেতে পারে, বাড়ি ভাড়ার জন্য। তবে যদি নিজের বাড়ি থাকে সেক্ষেত্রে এই খরচটি থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। সেক্ষেত্রেই অতিরিক্ত টাকাটি যেকোনো নিরাপদ স্থানে সঞ্চিত রাখা পেতে পারে।

বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি গ্যাস ও পরিবহন

বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি গ্যাসের জন্য মাসিক খরচ হিসেবে বরাদ্দ করা যায় ৩০০০ টাকা। যে কোনো গণ পরিবহন বা নিজের স্কুটি, বাইক ইত্যাদির পেট্রোল খরচ বাবদ মোট বরাদ্দ ২০০০ টাকা।

খাওয়া দাওয়া

চাল, ডাল সহ সমস্ত রকম মশলাপাতির জন্য খরচ হতে পারে ৫০০০ টাকা, শাকসবজি এবং মাছ মাংসের জন্য ৪০০০ টাকা, দুধ, ফল ইত্যাদি আনুষঙ্গিক খাবারের জন্য ৩০০০ টাকা ধরে খাওয়া দাওয়া পিছু খরচ বরাদ্দ করা যেতে পারে ১২০০০ টাকা।

সন্তানের পড়াশোনা

সন্তানদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে ৫০০০০ টাকা বেতন কাঠামোর জন্য ৪ হাজার টাকা, ৪০০০০ টাকার ক্ষেত্রে ৩০০০ টাকা এবং ৩০০০০ টাকার ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা বরাদ্দ করা যেতে পারে।

অন্যান্য

অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিনোদনমূলক খরচের জন্য ৫০ হাজার টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ৪০০০ টাকা, ৪০ হাজার টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ৩০০০ টাকা, ৩০ হাজার টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা খরচ করা উচিত।


ইনকাম অনুযায়ী খরচের হিসাব

অর্থাৎ ৩০০০০ টাকা বেতনে ২৬০০০ টাকা খরচ হলে আপনি সঞ্চয় করতে পারেন ৪ হাজার টাকা, ৪০০০০ টাকা বেতনে ৩২০০০ টাকা খরচ হলে সঞ্চয় হবে ৮০০০ টাকা, ৫০০০০ টাকা বেতনে ৩৭০০০ টাকা খরচ হলে মোট সঞ্চয় করতে পারবেন ১৩০০০ টাকা। আপনার যদি ৩০ হাজার টাকার কম ইনকাম হয় মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা তাহলে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আপনার খরচ খুবই হিসাব মতো করতে হবে। এবং আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে প্রতি মাসে নূন্যতম ২,০০০ টাকা সঞ্চয় করতে হবে। আপনি অবশ্যই আপনার আয়ের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সঞ্চয় করার সিদ্ধান্ত নেবেন।

অর্থ সঞ্চয়ের পদ্ধতি

অর্থ সঞ্চয়ের জন্য কয়েকটি পদ্ধতি অবশ্যই পালন করা উচিত। সেগুলি হল-

  • কখনোই অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করা উচিত নয়। এছাড়াও নিজের পরিস্থিতি বুঝে ব্যয় করা উচিত।বেতন কম হলে যেকোনো বিনোদনমূলক খরচের থেকে সন্তানের পড়াশোনা, পরিবারের পুষ্টিকর খাবার ইত্যাদির দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।

  • বেতন পাওয়ার পরেই নিজের মতো গুছিয়ে একটি হিসেব করে ফেলা উচিত। হিসেবের পর বাড়তি টাকাটি সঞ্চয় হিসেবে রেখে দেওয়া উচিত। তবেই ভবিষ্যতের আর্থিক সমৃদ্ধি বজায় থাকবে।

bottom of page